আমরা প্রতিদিন বিভিন্নভাবে (যেমন প্রস্রাব, ঘাম, শ্বাসপ্রশ্বাস ইত্যাদি) শরীর থেকে পানি হারাই। আমাদের ফুসফুস থেকে নিশ্বাসের সঙ্গে দৈনিক দুই থেকে চার কাপ পানি বের হয়ে যায়। অন্যদিকে দৈনিক ছয়বার বাথরুমে গেলে আরও ছয় কাপ পানি দেহ থেকে কমে যায়। প্রতিদিন কতটুকু পানি পান করতে হবে, তা দেহের উচ্চতা ও কাজের পরিমাণের ওপর নির্ভর করে।
সবার জন্য একই মাপে পানি পান করা যাবে না, যে মাপটি এখন পর্যন্ত আদর্শ মনে করা হয়, তা হলো কেজি হিসেবে দেহের ওজনকে ৩০ দ্বারা ভাগ করলে ভাগফলের পরিমাণ অনুযায়ী পানি পান করতে হবে। অর্থাৎ আপনার ওজন ৭০ কেজি হলে (৭০/৩০ = ২.৩) ২ দশমিক ৩ লিটার পানি পান করতে হবে। এর অর্থ হলো, প্রতিদিন ৮ গ্লাসের (প্রতি গ্লাস ২০০ মিলি) অধিক পানি পান করা বাঞ্ছনীয়।
বেশি পানি খেলে বমি বমি ভাব, ক্লান্তি, ঘুম ঘুম ভাব, অতিরিক্ত প্রস্রাব এবং মাথাব্যথা হতে পারে। হার্টের ওপর অপ্রয়োজনীয় চাপ পড়ে। হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। কিডনির ছাঁকনি প্রক্রিয়ায় ব্যাঘাত ঘটায় অতিরিক্ত পানি। শরীরের কোষ ফুলতে থাকে। মাথার কোষও ফুলে যেতে পারে। পরিণাম ব্রেন স্ট্রোক। বুকে ব্যথা, লিভারের সমস্যা, পেটে যন্ত্রণা হতে পারে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি শরীরে গেলে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
কখনোই একসঙ্গে অনেক পানি পান করবেন না। ভারী পরিশ্রম অথবা ব্যায়ামের সময় সবারই একটু একটু পানি পান করা উচিত। যতটুকু তৃষ্ণা ততটুকু পানি, কখনো তার চেয়ে বেশি নয়! বেশি হলেই পানির অপর নাম কেবল জীবন নয়, তা হবে মরণও।
লেখক: খাদ্য পথ্য ও আকুপ্রেশার বিশেষজ্ঞ।
No comments:
Post a Comment